বাজার থেকে আম কিনতে গেলে আপনি, আমি নানাজাতের আম খুঁজি। যেমনঃ কখনো ফজলি আপু, কখনো ল্যাংড়া আম,আশ্বিনা ইত্যাদি,,, কিন্তু ভেবেছেন কি আমের এমন বাহারি মজার নামকরনের পেছনে কোনো মজার গল্প থাকতে পারে!!
আসুন জেনে নেই বাহারী আমের নামকরনের পেছনের গল্পগুলো
ফজলি আম ঃ প্রচলিত আছে, ১৮০০ সালে ফজলি বিবি নামে এক বৃদ্ধা বাস করতেন গৌড়ের এক প্রাচীন কুঠিতে। তার বাড়ির উঠনেই ছিলো একটি আমগাছ। তিনি গাছটির খুব যত্ন নিতেন। ওই এলাকার কালেক্টর রাজভেনশ একবার বৃদ্ধার ঘরের কাছে শিবির স্থাপন করেন। তার আগমনের খবর পেয়ে বৃদ্ধা তার গাছের আম খাওয়াতে তার সাথে দেখা করতে যান। সেই আম খেয়ে কালেক্টর সাহেব তো খুবই মজা পান! এবং আমের নাম জানতে চান। আমের নাম ইংরেজিতে জিগাসা করেন কিন্তু এদিকে বৃদ্ধা তো শুধু তৎকালীন সময় সাধারন মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত কিছু ইংরেজি শব্দ ছাড়া, ইংরেজির কিছুই বুঝেন না তাই ” নেম ” শব্দটি শুনে বলে ফেলেন ফজলি বিবি,,, সেই থেকে এই আমের নাম হয়ে যায় ফজলি আম!
ল্যাংড়া আম ঃ মুঘল আমলে এই আমের চাষ শুরু হয় কিন্তু সেই সময় আমের নাম নিয়ে কেউ মাথাঘামায়নি।পরে আঠারো শতকে এক ফকির এই আমের চাষ করেন,,,অনেক ফলন হয় সেসময়ে,,,তো এই ফকিরের পায়ে একটু সমস্যা ছিলো, অনেকটা খুঁড়িয়ে হাটতেন,,,তাই মানুষ মজা করে সেই আমের নামকরন করেন ” ল্যাংড়া আম ”
গোপালখাস ঃ এই আম মূলত বিখ্যাত তার গন্ধের জন্য। মিষ্টি গোলাপের গন্ধ আর গায়ে গোলাপের লালচে আভা থাকে জন্য এই আমকে গোলাপখাস বলে ডাকার চল শুরু হয়ে যায়। প্রাচীন বাংলার আমগুলোর মধ্যে গোলাপখাস অন্যতম ও জনপ্রিয়।
গুটি ঃ দেখতে ছোট এক প্রকারের আম খেয়ে সেই আম নিজের বাগানে পুঁতেছিলেন মালদহের এক দরিদ্র কৃষক। সেই আটি থেকেই জন্ম হয়েছিলো আরেক আম গাছ। কাঁচা অবস্থায় এই আম খুব টক হয় কিন্তু পাকলে অনেক মিষ্টি হয়। তো এই আঁটি বা গুঁটি থেকে এই গাছ জন্মায় বলে এই আমের নাম হয় গুঁটি আম।
আশ্বিনা ঃ আশ্বিন মাসে পাকে বলে তাকে আশ্বিনা আম বলা হয়ে থাকে।
আশ্বিনা জাতের আম গাছে থাকে সাধরনতন আগস্ট মাস পর্যন্ত। কিছু কিছু এলাকায় সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকেও পাওয়া যায়।
তো জানলেন তো বাহারি নামের কিছু আমের নামকরনের পেছনের মজার গল্পগুলোন। এরকম আম নিয়ে আরও বিভিন্নধরনের তথ্য পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।